Saturday, 14 September 2013
জাতীয় সঙ্গীত/ আমার সোনার বাংলা
আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি
চিরদিন তোমার আকাশ, তোমার বাতাস,
ও মা, আমার প্রাণে বাজায় বাঁশি ।।
ও মা ফাগুনে তোর আমের বনে ঘ্রানে পাগল করে,
মরি হায়, হায় রে---
ও মা, অঘ্রানে তোর ভরা ক্ষেতে, আমি কি দেখেছি মধুর হাসি ।।
কী শোভা, কী ছায়া গো, কী স্নেহ, কী মায়া গো---
কী আঁচল বিছায়েছ বতের মূলে, নদীর কূলে কূলে।
মা, তোর মুখের বাণী আমার কানে লাগে সুধার মতো
মরি হায়, হায় রে---
মা, তোর বদনখানি মলিন হলে, ও মা, আমি নয়ন জলে ভাসি ।।
তোমার এই খেলাঘরে শিশুকাল কাটিল রে,
তোমারি ধূলামাটি অঙ্গে মাখি ধন্য জীবন মানি।
তুই দিন ফুরালে সন্ধ্যাকালে কী দীপ জ্বালিস ঘরে,
মরি হায়, হায় রে---
তখন খেলাধুলা সকল ফেলে, ও মা, তোমার কোলে ছুটে আসি ।।
ধেনু-চরা তোমার মাঠে, পারে যাবে খেয়াঘাটে,
সারাদিন পাখি-ডাকা ছায়ায়-ঢাকা তোমার পল্লীবাটে,
তোমার ধানে-ভরা আঙিনাতে জীবনের দিন কাটে,
মরি হায়, হায় রে---
ও মা, আমার যে ভাই তারা সবাই, ও মা, তোমার রাখাল তোমার চাষি ।।
ও মা, তোর চরণেতে দিলেম এই মাথা পেতে-
দে গো তোর পায়ের ধূলা, সে যে আমার মাথার মানিক হবে।
ও মা, গরিবের ধন যা আছে তাই দিব চরণতলে,
মরি হায়, হায় রে-
ও মা, পরের ঘরে কিনব না, মা, তোর ভূষণ ব'লে গলার ফাঁসি ।।
পুরানো সেই দিনের কথা ভুলবি কি রে হায় (রবীন্দ্রসঙ্গীত)
পুরানো সেই দিনের কথা ভুলবি কি রে হায়।
ও সেই চোখের দেখা, প্রাণের কথা, সে কি ভোলা যায়।
আয় আর-একটিবার আয় রে সখা, প্রাণের মাঝে আয়।
মোরা সুখের দুখের কথা কব, প্রাণ জুড়াবে তায়।
মোরা ভোরের বেলা ফুল তুলেছি, দুলেছি দোলায়---
বাজিয়ে বাঁশি গান গেয়েছি বকুলের তলায়।
হায় মাঝে হল ছাড়াছাড়ি, গেলেম কে কোথায়---
আবার দেখা যদি হল, সখা, প্রাণের মাঝে আয় ।।
খোলো খোলো দ্বার, রাখিয়ো না আর (রবীন্দ্রসঙ্গীত)
খোলো খোলো দ্বার, রাখিয়ো না আর
বাহিরে আমায় দাঁড়ায়ে।
দাও সাড়া দাও, এই দিকে চাও,
এসো দুই বাহু বাড়ায়ে ।।
কাজ হয়ে গেছে সারা, উঠেছে সন্ধ্যাতারা।
আলোকের খেয়া হয়ে গেল দে'য়া
অন্তসাগর পারায়ে ।।
তরি লয়ে ঝারি এনেছ কি বারি,
বেঁধেছ কি চুল, তুলেছ কি ফুল,
গেঁথেছ কি মালা মুকুলে।
ধেনু এল গোঠে ফিরে, পাখিরা এসেছে নীড়ে,
পথ ছিল যত জুড়িয়া জগত
আঁধারে গিয়েছে হারায়ে ।।
ফুলে ফুলে ঢ'লে ঢ'লে বহে কিবা মৃদু বায় (রবীন্দ্রসঙ্গীত)
ফুলে ফুলে ঢ'লে ঢ'লে বহে কিবা মৃদু বায়,
তটিনী হিল্লোল তুলে কল্লোলে চলিয়া যায়!
পিক কিবা কুঞ্জে কুঞ্জে কুহু কুহু কুহু গায়,
কী জানি কিসেরি লাগি প্রাণ করে হায় হায়! ।।
ভালোবাসি, ভালোবাসি (রবীন্দ্রসঙ্গীত)
ভালোবাসি, ভালোবাসি---
এই সুরে কাছে দূরে জলে স্থলে বাজায় বাঁশি ।।
আকাশে কার বুকের মাঝে
ব্যথা বাজে,
দিগন্তে কার কালো আঁখি, আঁখির জলে যায় ভাসি ।।
সেই সুরে সাগরকূলে
বাঁধন খুলে
অতল রোদন উঠে দুলে।
সেই সুরে বাজে মনে
ভুলে-যাওয়া গানের বাণী, ভোলা দিনের কাঁদন-হাসি ।।
এসো শ্যামল সুন্দর (রবীন্দ্রসঙ্গীত)
এসো শ্যামল সুন্দর
আনো তব তপহারা তৃষাহারা সঙ্গসুধা
বিরহিণী চাহিয়া আছে আকাশে ।।
সে যে ব্যথিত হৃদয় আছে বিছায়ে
তমাল কুঞ্জপথে সজল ছায়াতে
নয়নে জাগিছে করুণ রাগিণী ।।
বকুল মুকুল রেখেছে গাঁথিয়া
বাজিছে অঙ্গনে মিলন বাঁশরি
আনো সাথে তোমার মন্দিরা
চঞ্চল নৃত্যের বাজিবে ছন্দে সে
বাজিবে কঙ্কন বাজিবে কঙ্কিনী
ঝঙ্কারিবে মঞ্জীর রুণু রুণু ।।
আমার পরাণ যাহা চায় (রবীন্দ্রসঙ্গীত)
আমার পরাণ যাহা চায়
তুমি তাই তুমি তাই গো
তোমা ছাড়া আর এই জগতে
মোর কেহ নাই কিছু নাই গো ।।
তুমি সুখ যদি নাহি পাও
যাও সুখেরও সন্ধানে যাও
আমি তোমারে পেয়েছি হৃদয় মাঝে
আর কিছু নাহি চাই গো ।।
আমি তোমার বিরহে রহিব বিলীন
তোমাতে করিব বাস
দীর্ঘ দিবস দীর্ঘ রজনী
দীর্ঘ বরষ মাস।
যদি আর কারে ভালোবাসো
যদি আর নাহি ফিরে আসো
তবে তুমি যাহা চাও তাই যেন পাও
আমি যত দুঃখ পাই গো ।।
পাগলা হাওয়ার বাদল দিনে (রবীন্দ্রসঙ্গীত)/ বাদল দিনের গান
পাগলা হাওয়ার বাদল দিনে
পাগল আমার মন জেগে ওঠে।
চেনা-শোনার কোন বাইরে
যেখানে পথ নাই নাইরে
সেখানে অকারনে যাই ছুটে ।।
ঘরের মুখে আর কি রে
কোনদিন সে যাবে ফিরে
যাবেনা যাবেনা
দেয়াল যত সব গেল টুটে
যাবেনা যাবেনা ।।
বৃষ্টি-নেশা ভরা সন্ধ্যাবেলা
কোন বলরামের আমি চেলা।
আমার স্বপ্ন ঘিরে নাচে মাতাল জুটে
যত মাতাল জুটে
যা না চাইবার তাই আজি চাই গো
যা না পাইবার তাই কোথা পাই গো?
পাবনা পাবনা আ- মরি
অসম্ভবের পায়ে মাথা কুটে
পাবনা পাবনা ।।
এসো হে বৈশাখ (রবীন্দ্রসঙ্গীত)/ নববর্ষের গান
এসো, এসো, এসো হে বৈশাখ।
তাপসনিঃশ্বাসবায়ে মুমূর্ষুরে দাও উড়ায়ে,
বৎসরের আবর্জনা দূর হয়ে যাক যাক যাক ।।
যাক পুরাতন স্মৃতি, যাক ভুলে যাওয়া গীতি,
যাক অশ্রুবাষ্প সুদূরে মিলাক যাক যাক ।।
মুছে যাক গ্লানি, ঘুচে যাক জরা,
অগ্নিস্নানে শুচি হোক ধরা
রসের আবেশরাশি শুষ্ক করি দাও আসি,
আনো আনো আনো তব প্রলয়ের শাঁখ।
মায়ার কুজ্ঝটিজাল যাক দূরে যাক যাক যাক।।
আমরা সবাই রাজা (রবীন্দ্রসঙ্গীত)/ছড়া গান
আমরা সবাই রাজা আমাদের এই রাজার রাজত্বে-
নইলে মোদের রাজার সনে মিলব কী স্বত্বে? ।।
আমরা যা খুশি তাই করি,
তবু তার খুশিতেই চরি,
আমরা নই বাঁধা নই দাসের রাজার ত্রাসের দাসত্বে-
নইলে মোদের রাজার সনে মিলব কী স্বত্বে? ।।
রাজা সবারে দেন মান,
সে মান আপনি ফিরে পান,
মোদের খাটো করে রাখেনি কেউ কোন অসত্যে-
নইলে মোদের রাজার সনে মিলব কী স্বত্বে?
আমরা চলব আপন মতে,
শেষে মিলব তারি পথে,
মোরা মরবনা কেউ বিফলতার বিষম আবর্তে-
নইলে মোদের রাজার সনে মিলব কী স্বত্বে? ।।
গ্রামছাড়া ওই রাঙা মাটির পথ (রবীন্দ্রসঙ্গীত)
গ্রামছাড়া ওই রাঙা মাটির পথ
আমার মন ভুলায় রে।
ওরে কার পানে মন হাত বাড়িয়ে
লুটিয়ে যায় ধুলায় রে ।।
ও যে আমায় ঘরের বাহির করে,
পায়ে-পায়ে ধরে
(মরি হায় হায় রে)
ও যে কেড়ে আমায় নিয়ে যায় রে
যায় রে কোন চুলায় রে আমার ।।
ও কোন বাঁকে কী ধন দেখাবে,
কোনখানে কী দায় ঠেকাবে---
কোথায় গিয়ে শেষ মেলে যে
ভেবেই না কুলায় রে আমার ।।
জাগরণে যায় বিভাবরী (রবীন্দ্রসঙ্গীত)
জাগরণে যায় বিভাবরী----
আঁখি হতে ঘুম নিল হরি
মরি মরি ।।
যার লাগি ফিরি একা একা---
আঁখি পিপাসিত, নাহি দেখা,
তারি বাঁশি বাজে হিয়া ভরি
মরি মরি ।।
বাণী নাহি, তবু কানে কানে
কী যে শুনি তাহা কেবা জানে।
এই হিয়াভরা বেদনাতে,
বারি-ছলোছলো আঁখিপাতে,
ছায়া দোলে দিবানিশি ধরি
মরি মরি ।।
আয় তবে সহচরী, হাতে হাতে ধরি ধরি (রবীন্দ্রসঙ্গীত)
আয় তবে সহচরী, হাতে হাতে ধরি ধরি
নাচিবি ঘিরি ঘিরি, গাহিবি গান।
আন তবে বীণা-------
সপ্তম সুরে বাঁধ তবে তান ।।
পাশরিব ভাবনা, পাশরিব যাতনা,
রাখিব প্রমোদে ভরি দিবানিশি মনপ্রাণ।
আন তবে বীণা-------
সপ্তম সুরে বাঁধ তবে তান ।।
ঢালো ঢালো শশধর, ঢালো ঢালো জোছনা।
সমীরণ, বহে যা রে ফুলে ফুলে ঢলি ঢলি।
উলসিত তটিনী,
উথলিত গীতরবে খুলে দে রে মনপ্রাণ ।।
মেঘের কোলে রোদ হেসেছে (রবীন্দ্রসঙ্গীত)/ছড়া গান
মেঘের কোলে রোদ হেসেছে,
বাদল গেছে টুটি।
আজ আমাদের ছুটি ও ভাই
আজ আমাদের ছুটি ।।
কী করি আজ ভেবে না পাই
পথ হারিয়ে কোন বনে যাই
কোন মাঠে যে ছুটে বেড়াই
সকল ছেলে জুটি ।।
কেয়া পাতার নৌকা গড়ে
সাজিয়ে দেব ফুলে ফুলে
তালদীঘিতে ভাসিয়ে দেব
চলবে দুলে দুলে ।।
রাখাল ছেলের সঙ্গে ধেনু
চরাব আজ বাজিয়ে বেণু
মাখব গায়ে ফুলের রেণু
চাঁপার বনে লুটি ।।
ও আমার দেশের মাটি, তোমার পরে ঠেকাই মাথা (রবীন্দ্রসঙ্গীত)
ও আমার দেশের মাটি, তোমার পরে ঠেকাই মাথা।
তোমাতে বিশ্বময়ীর, তোমাতে বিশ্বমায়ের আঁচল পাতা ।।
তুমি মিশেছ মোর দেহের সনে,
তুমি মিলেছ মোর প্রাণে মনে,
তোমার ওই শ্যামলবরণ কোমল মূর্তি মর্মে গাঁথা ।।
ওগো মা, তোমার কোলে জনম আমার,
মরণ তোমার বুকে।
তোমার পরেই খেলা আমার দুঃখে সুখে।
তুমি অন্ন মুখে তুলে দিলে,
তুমি শীতল জলে জুড়াইলে,
তুমি যে সকল-সহা সকল-বহা মাতার মাতা ।।
ও মা, অনেক তোমার খেয়েছি গো,
অনেক নিয়েছি মা ---
তবু জানি নে-যে কী বা তোমায় দিয়েছি মা!
আমার জনম গেল বৃথা কাজে,
আমি কাটানু দিন ঘরের মাঝে---
তুমি বৃথা আমায় শক্তি দিলে শক্তিদাতা ।।
Subscribe to:
Posts (Atom)